Fri. Mar 31st, 2023

    দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের ভ্যানচাল‌কের ছে‌লে সবুজ সরদার। ১৮ বছরের সদ্য এসএস‌সি পাস এ কিশোর মাত্র ৪৫ দিনে চালকবিহীন উড়োজাহাজ (‌ড্রোন) বানিয়ে সবাইকে চমকে দিয়েছে।

    নিজের মেধা কাজে লাগিয়ে বানানো সবুজের চালকবিহীন উড়োজাহাজ এলাকায় ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। এ উড়জাহাজ দেখ‌তে প্রতিদিন ভিড় কর‌ছে আশপাশের এলাকার বিভিন্ন বয়সের মানুষ।

    স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ফুলবাড়ী উপ‌জেলার শিবনগর ইউ‌নিয়নের প‌লি‌ শিবনগর ম‌হেশপুর গ্রা‌মের ভ্যানচালক মো. একরামুল সরদা‌রের ছে‌লে মো. সবুজ সরদার। সে ফুলবাড়ী ক‌লেজি‌য়েট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০২১ সা‌লে এসএস‌সি পাস করে দিনাজপুর উত্তরণ প‌লি‌টেক‌নিক্যাল ইন‌স্টি‌টিউটে ত‌ড়িৎ প্র‌কৌশল বিভা‌গে ভ‌র্তি হ‌য়ে‌ছে।

    সবুজ জানায়, ছোটবেলা থেকেই তার স্বপ্ন নিজের তৈরি উড়োজাহাজ আকাশে ওড়াবে সে। সেই স্বপ্ন থেকেই নিজের মেধা ও জ্ঞান ব্যবহার করে মাত্র ৪৫‌ দি‌নে এ শিক্ষার্থী তৈরি ক‌রে‌ছে এক‌টি চালকবিহীন উড়োজাহাজ বা ড্রোন। এটির অবকাঠা‌মো ককশি‌টের তৈ‌রি হ‌লেও রি‌মো‌ট ক‌ন্ট্রোলের মাধ্য‌মে অনায়া‌সে নিয়ন্ত্রণ করা যায়।

    স‌রেজ‌মি‌নে দেখা গেছে, প‌লি শিবনগর জা‌মে মস‌জিদের পা‌শে ফসলের মা‌ঠে উড়োজাহাজ ওড়াচ্ছে সবুজ। তা দেখতে ভিড় জমিয়েছে নানা বয়সী উৎসুক মানুষ।

    ম‌হেশপুর গ্রা‌মের মো. জিয়ারুল হক সরদার ব‌লেন, সবুজ ‌লেখাপড়ার পাশাপা‌শি পাঠকপাড়া বাজা‌রে মোবাই‌ল মেকা‌নিকের কাজও ক‌রে। এরই মধ্যে চালকবিহীন ‌উড়োজাহাজ তৈ‌রির চিন্তা মাথায় আ‌সে তার। প্রয়োজনীয় পৃষ্ঠপোষকতা ও সহযোগিতা পেয়ে একজন মেধাবী ইঞ্জিনিয়ার হতে পারবে সবুজ।

    সবুজের মা শেফালী বেগম ব‌লেন, অভা‌বের সংসা‌রে সবসময় এটা সেটা কি‌নে কি সব যেন ক‌রে সবুজ। বাবার বকু‌নির ভ‌য়ে অনেক সময় চুপচাপ কাজ করে। একটু একটু করে টাকা জমিয়ে অনলাইনে দামি যন্ত্র কিনেছে। সেসব দিয়েই এ উড়োজাহাজ বানিয়েছে।

    মেধাবী কিশোর সবুজ সরদার ব‌লেন, সবসময় ব্য‌তিক্রম কিছু করার চিন্তা মাথায় আ‌সে কিন্তু টাকার অভা‌বে হয়ে ওঠে না। এই চালকবিহীন উড়োজাহাজ (ড্রোন) তৈ‌রি‌তে ৪৫ দিনে খরচ হ‌য়ে‌ছে প্রায় ১২ হাজার টাকা। একবার চার্জ কর‌লে ৩০ মিনিট আকাশে উড়‌তে পা‌রে। অনায়া‌সে মাটি থে‌কে কিংবা হা‌তে নি‌য়ে ওড়া‌নো যায়। রি‌মো‌টের সাহা‌য্যে দেড় কি‌লো‌মিটার দূর থে‌কেও নিয়ন্ত্রণ করা যায় এ‌টি। আমি এমন একটি ড্রোন তৈআরি করতে চাই- যা দিয়ে ফসলি জমিতে অল্প সময়ে সহজেই কীটনাশক প্রয়োগ করা যাবে। যা হবে আমাদের কৃষির আধুনিকায়নের অনন্য উদ্ভাবন।