দেশে প্রথমবারের মতো ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষ থেকে প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা ১৩ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এ পরীক্ষায় বুয়েট ও ডুয়েট ছাড়া বাকি তিন বিশ্ববিদ্যালয় অংশ নিচ্ছে। আর এই তিন প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় হলো চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট), খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট), রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (রুয়েট)।
এবছর প্রাথমিক বাছাইয়ে উত্তীর্ণদের নিয়ে ‘ক’ গ্রুপে ৫০০ ও ‘খ’ গ্রুপে ৭০০ নম্বরের পরীক্ষা হবে। এমসিকিউ প্রশ্নপত্রে ‘ক’ গ্রুপে ৫০০ নম্বর, ‘খ’ গ্রুপে ৫০০ নম্বরের সঙ্গে যোগ করা হবে অতিরিক্ত অংকন ২০০ নম্বর।
ভর্তি পরীক্ষার জন্য শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি নিয়ে কিছু পরামর্শ জানিয়েছেন চুয়েটের যন্ত্রকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী ইশতিয়াক আহম্মেদ ফাহিম।
# সহজ কৌশল মেনে চলা:
একজন শিক্ষার্থী ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারবে কিনা তার ৬০% নির্ভর করে সে পরীক্ষার কক্ষে কিভাবে নিজেকে নিয়মানুবর্তীতার ভিতর রাখতে পারছে। একই সাথে ৩/৪ টি সাবজেক্টের দুইটি করে পেপার মনে রাখা এবং সময় মেনে চলে সবগুলো প্রশ্নের উত্তর করা। স্বল্প জায়গার ভিতরে রাফ/ক্যালকুলেশন করা।
যেহেতু ইঞ্জিনিয়ারিং ভর্তি পরীক্ষায় এইচএসসির তুলনায় অনেক বড় বড় ম্যাথমেটিকাল প্রবলেম বা নিউমেরিকাল সলভ করতে দেয়া হয় তাই শিক্ষার্থীকে অবশ্যই মাথায় ক্যালকুলেশনে লাইন স্কিপ করার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। এছাড়া অনেকক্ষেত্রে দেখা যায় শিক্ষার্থীরা কঠিন প্রশ্ন পেলে তারা সহজ এবং তাদের জেনে আসা প্রশ্নেও ভুল করে বসে। এইজন্য তাদের উচিত অবশিষ্ট দিনগুলোতে বাসায় বসে ‘সেলফ এক্সাম’ এর মাধ্যমে নিজেকে ভর্তি পরীক্ষার হল ও পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত করে নেয়া।
# সময়ের দিকে লক্ষ্য রাখা:
ইঞ্জিনিয়ারিং ভর্তি পরীক্ষায় সময় অনেক বড় একটি বিষয়। একজন শিক্ষার্থীকে শুধু সঠিক উত্তর দিলেই চলবে না, নির্দিষ্ট সময়ের ভিতরে সর্বোচ্চ সঠিক উত্তর দিতে হবে। এজন্য প্রয়োজন বেশি বেশি অনুশীলন, বেশি বেশি অনুশীলন ভুলের পরিমাণ কমায় এবং উত্তরকে আরো মার্জিত ও বিশুদ্ধ করে। ঠিক এই অনুশীলনটাই কাজে লাগাতে হবে। প্রতিদিন ঘড়ি ধরে নিউমেরিকাল/প্রবলেম সলভ করলে সময় ব্যাবস্থাপনা এবং পুরো সময়ের ভিতরে সব প্রশ্নের উত্তর করা সম্ভব হবে।
# মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকা:
পরীক্ষার হলে মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকাও বড় একটা বিষয়। অনেক সময় দেখা যায় শিক্ষার্থীরা জানা প্রশ্নের উত্তর করতে পারে না বা জানা জিনিস ভুল করে ফেলে। এই সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্য নিজেকে মানসিকভাবে প্রস্তুত রাখতে হবে।
পরীক্ষার হলে সবসময় সহজ/কমন প্রশ্ন দিয়ে উত্তরপত্র লেখা শুরু করতে হবে। যেসব প্রশ্ন কঠিন/সন্দেহের সৃষ্টি করে সেগুলা বাদ দিয়ে পরে এসে উত্তর করতে হবে। এতে পরীক্ষায় উত্তর করার ধারা ঠিক থাকবে এবং ভুল হবার সম্ভাবনাও কম হবে।
প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের ভর্তি পরীক্ষায় প্রতি বছরই কিছু নতুন ধরনের প্রশ্ন থাকে। প্রতিটি শিক্ষার্থীর জ্ঞানের পরিধি যাচাই করার জন্য এটি করা হয়। এধরনের নতুন প্রশ্ন আসলে ঘাবড়িয়ে না গিয়ে ওই বিষয়ের একেবারে বেসিক>ডেটা ম্যানিপুলেশন>ফর্মুলা>ক্যালকুলেশন এই ৪ ধাপে প্রশ্নগুলো সলভ করার চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।
মনে রাখতে হবে, চান্স পাওয়ার জন্য শতভাগ সঠিক উত্তরের প্রয়োজন নেই তবে বেশিরভাগ উত্তর সঠিক হওয়াটা অনেক বেশি দরকার।
সবসময় খেয়াল রাখতে হবে, নিজের সর্বোচ্চ ভালোর জন্য আশা রাখতে হবে। তাই পরিপূর্ণ মেধার পরিশ্রমের পাশাপাশি সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা,নিয়মানুবর্তীতা, লেগে থাকা, নিজেকে অনন্য বানানো সবকিছুর সমন্বয়ে একজন শিক্ষার্থীকে সফল ভর্তি যোদ্ধা হিসাবে গড়ে তুলবে।