




…………………………





করোনাকালের দীর্ঘ বন্ধে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষার রুটিন সব ওলট–পালট হয়ে গেছে। পড়ালেখা শেষ করে যাঁরা দ্রুত পেশাজীবনে পা রাখার কথা ভাবছিলেন, সেশনজটের দুর্ভাবনা নিশ্চয়ই তাঁদের ভোগাচ্ছে। তবে এই দুর্যোগেও হাল ছাড়েননি অনেক তরুণ। পড়ালেখার পাশাপাশি ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুতি সেরে রাখছেন তাঁরা।
……
করোনায় শিক্ষাজীবনে ছন্দপতন হলেও হাল ছাড়েননি সিলেটের এমসি কলেজের পরিসংখ্যান বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ফারিহা রহমান। সময়টা কাজে লাগাতে, আর নিজেকে এগিয়ে রাখতে চাকরি খুঁজছিলেন। সিলেটের পোশাকবিক্রেতা প্রতিষ্ঠান ‘মাহা’র হিসাব শাখায় চাকরি নেন করোনাকালেই। এই চাকরির পাশাপাশি পড়াশোনাও চালিয়ে যাচ্ছেন ফারিহা।





…………………………





দুই বোন, এক ভাইয়ের মধ্যে ফারিহা বড়। কর্মস্থলে কথা হয় তাঁর সঙ্গে। পরিবারের বড় সন্তান হিসেবে দায়িত্ব একটু বেশি। করোনা পরিস্থিতির আগে একটি কিন্ডারগার্টেন স্কুলে শিক্ষকতা করতেন। স্কুল বন্ধ হওয়ায় নতুন কাজ খুঁজতে শুরু করেন। কয়েক দিন চেষ্টার পর পাঁচটি প্রতিষ্ঠান থেকে ডাক এসেছিল। ফারিহা বেছে নেন ‘মাহা’কে। গত ২৩ মে থেকে স্থায়ীভাবে এখানে কাজ করছেন তিনি।
ফারিহা বলেন, ‘আমার কাজটা অনেক চ্যালেঞ্জিং। পাশাপাশি এখান থেকে অনেক কিছু শেখার আছে। গ্রাহকদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ, ব্যাংকের কার্ডে লেনদেনসহ নানা বিষয় সম্পর্কে ধারণা পাচ্ছি। আমার প্রতিষ্ঠানও খুব সহযোগিতা করছে। এখানে শিক্ষার্থীদের জন্য আলাদা সুযোগ-সুবিধা রয়েছে।’
সিলেট জালালাবাদ ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে ২০১৭ সালে এসএসসি ও ২০১৯ সালে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। পরে কয়েকটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিয়েও সুযোগ পাননি। আশাহত হয়েছেন, তবে হাল ছাড়েননি। মানসিক প্রশান্তির জন্যই মূলত শিশুদের সঙ্গ পেতে কিন্ডারগার্টেন স্কুলে শিক্ষকতার চাকরি নিয়েছিলেন। করোনাকালে কয়েকটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে খণ্ডকালীন প্রচারণা ও পরীক্ষামূলক প্রকল্পে কাজও করেছেন।





…………………………





সিলেট নগরীর নয়াসড়ক এলাকায় নিজস্ব ভবনে মাহার প্রধান ও একমাত্র বিক্রয়কেন্দ্র। প্রতিষ্ঠানটিতে ১১২ জন কর্মী কাজ করেন। যাঁদের ৮০ শতাংশই শিক্ষার্থী। মাহা বিক্রয়কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক আবদুল কাদির বলেন, ‘বেশির ভাগ কর্মী শিক্ষার্থী হওয়ায় অনেকেই পড়াশোনা শেষ করে নতুন চাকরিতে চলে যান। এতে কর্মীর পদ খালি হওয়ায় নতুন কর্মী নিয়োগ দেওয়া হয়। নতুন কর্মী নিয়োগের পর মাহার পক্ষ থেকে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা ও কর্মদক্ষতা পর্যবেক্ষণ করেই পদোন্নতি ও বিভিন্ন শাখায় কাজ ভাগ করে দেওয়া হয়। এই পর্যবেক্ষণ থেকে ফারিহা রহমান স্থায়ী নিয়োগ পেয়েছেন।’