Mon. Dec 4th, 2023

    …………………………

    কোন কিছুই ভাল লাগে না। জাতীয় প্রবলেম বললে ভুল হবে না। ভাল না লাগা রোগের যদি কোন ওষুধ বাজারে পাওয়া যেত তবে ওই কোম্পানী নিশ্চিত অনেক আগেই বিল গেটসের থেকে বেশী ধনী হত। চোখ মেলে তাকান। ভাল না লাগা সত্বেও কত শত মানুষ প্রতিদিন সেই কাজটি করে যাচ্ছে নির্বিঘ্নে। খোঁজ নিয়ে দেখেন যে, যে কাজটি করছে তাদের বেশীর ভাগ মানুষের সেই কাজটি করতে ভাল লাগে না। অপছন্দের পরও সেই কাজটি করতে বাধ্য হচ্ছে।
    ……
    একজন রিকশা চালকের রিকশা চালাতে ভাল লাগে না। জীবিকার তাগিদে ভাল না লাগলেও তাকে রিকশার পেডেল মারতে হচ্ছে। সামান্য সময় রাস্তায় জ্যামে আটকে থাকলে দুবার চৌদ্দ গুনে আটাশ গুষ্ঠি উদ্ধার করে ফেলি ট্রাফিকের। একবার ভেবে কি দেখেছি যেখানে জ্যামে আটকে আপনার আমার সহ্য সীমার বাঁধ ভেঙে যায় সেখানেই রোদ, বৃষ্টি উপেক্ষা করে একজন ট্রাফিক কিভাবে ঘন্টার পর ঘন্টা দায়িত্ব পালন করছে। সময় পেলে ওই মানুষটার সাথে কথা বলেন, জানতে পারবেন তারও ভাল না এ কাজ। ওস্তাদ ব্রেক। ওই ব্যাটা থামলি কেন। যাত্রী উঠানো হয় না।

    …………………………

    সারা রাস্তা ধাক্কাইতে ধাক্কাইতে আইলি। ড্রাইভিং সিটে যে ব্যক্তিটি আপনাকে নিয়ে গন্তব্যে রওনা দিয়েছে তারও রাস্তায় দাঁড়াতে ভাল লাগে না। আপনার সময়ের দাম তার কাছেও আছে। আপনার বিরক্তিকর বক্তব্য তার শ্রুতিমধুর লাগে না। ভাল লাগে না এই কাজ করতে। বাড়িতে বৃদ্ধ মা বাবার ওষুধ কিনতে, ছেলে মেয়েদের আহারের সাথে একটু শিক্ষার ব্যবস্থা করতে তাকেও রাস্তার মোড়ে মোড়ে দাঁড়াতে হয় যাত্রীর খোঁজে। পড়াশুনা করতে ভাল লাগে না।

    খেতে ভাল লাগে না। ঘুরতে ভাল লাগে না। ধুর এই জীবনটাই ভাল লাগে না। এমন হাজারো ভাল না লাগার গল্প আপনি চাইলেই শুনতে পারবেন আপনার আশেপাশের মানুষগুলো থেকে। সমাধান একটাই। দৃষ্টিভঙ্গিতে পরিবর্তন আনুন। ভাল লাগার কাজ করতে তো সবারই ভাল লাগে। ভাল লাগার কাজে ঘন্টা কাটিয়ে দিলেও মনে হয় মিনিট দশেক পার করেছেন। ভাল না লাগার কাজে সময় ব্যয় করতে চান না একটা মিনিটও।

    …………………………

    ভাল না লাগার কাজগুলোর সাথে একটু একটু করে সম্পৃক্ত হোন। সেটি না বুঝলে বোঝার চেষ্টা করুন। সময় ব্যয় করুন ভাল না লাগার কাজে। সহজ ভাবে দেখার চেষ্টা করুন। বিরক্তির পেছনে যে মানুষগুলো আছে তাদের অবস্থানটা পজিটিভ ভাবে দেখার চেষ্টা করুন। এক সময় দেখবেন সব কিছুই ভাল লাগতে শুরু করেছে। এ জগতের সকল সৃষ্টির মাঝে অসাধারন সৌন্দর্য লুকিয়ে আছে। শুধু তা দেখার জন্য মনের চোখ থাকা দরকার।

    কক্সবাজার সী বীচে গিয়ে কেউ শুধু বীচে পড়ে থাকা নোংরা ময়লা দেখে আর কেউ দেখে প্রকৃতির অপরুপ সৌন্দর্য। তেমনি কেউ বাসে বসে ভীড়ের মধ্যে জ্যামে আটকে থেকে আশপাশের মানুষদের কাজকর্মগুলো উপভোগ করে আর কেউ ট্রাফিকের গুষ্ঠি উদ্ধার করে। আপনি যেমন চিন্তা করবেন তেমনি উপভোগ করবেন। আপনার মানুষিক অশান্তির জন্য আপনি ছাড়া দ্বিতীয় কেউ দায়ী নয়। নিজের চিন্তাকে পজেটিভ করুন। ভাল না লাগা প্রবলেম সলভ হতে সময় লাগবে না।