




…………………………





প্রযুক্তির যুগে নিজেকে বদলে ফেলার এক অন্যতম মাধ্যম হয়ে দাঁড়িয়েছে অনলাইন প্ল্যাটফর্ম এবং সোশ্যাল মিডিয়া। অনেক তরুণই এই প্ল্যাটফর্মগুলোকে কাজে লাগিয়ে হয়েছেন উদ্যোক্তা, করছেন লাখ লাখ ডলার আয়। তেমনি একজন তরুণ আব্দুল্লাহ আল ইমরান। তিনি সাইবার নিরাপত্তা সেবায় দেশ ও দেশের বাইরে সুনাম অর্জন করেছেন।
…….
ইমরানের প্রতিষ্ঠানের নাম এআই ডেজিটাল এজেন্সি। সামাজিক মাধ্যমের সোশ্যাল সাইবার নিরাপত্তা নিয়ে বিভিন্ন সংগঠনের কাজ করেছেন তিনি। সঙ্গে ছিলেন বন্ধু শিবলু। এভাবেই শুরু হয় এআই ডেজিটাল এজেন্সির প্রতিষ্ঠাতা ইমরানের পথচলা।





…………………………





২০০০ সালে পটুয়াখালী জেলার বাউফল উপজেলার, কমলাপুর থানাধীন কেশবপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। কিন্তু শিক্ষাজীবনের শুরু ঢাকার মিরপুরের লাইসিয়াম কিন্ডারগার্টেনে। এখন নেত্রকোনা শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগে অধ্যয়নরত আছেন। বাবা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সদস্য। তার মা মারা গেছেন। দুই ভাই, এক বোন। তিনি মেঝো। বর্তমানে পরিবারসহ গাজীপুর সদরে বসবাস করছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিসাবে তিনি অন্যদের মতো বড় কিছু করার স্বপ্ন দেখেন। তার এ প্রয়াসের প্রতিফলন শুরু হয় বাদ্যযন্ত্রের সংগীত তৈরীর মাধ্যমে। পরবর্তী সময়ে ধারাবাহিকভাবে বই লেখেন এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সাইবার নিরাপত্তা নিয়ে কাজ শুরু করেন।
তিনি স্পটিফাই, ডিজার, অ্যাপল সংগীত, ইউটিউব, অ্যামাজন, সংগীত অন্যান্য বিভিন্ন সংগীত প্ল্যাটফর্মের ভেরিফাইড শিল্পী হয়ে উঠেন। তিনি তার প্রথম যন্ত্রের সংগীত অ্যালবাম মুক্তি দিয়েছেন ২০২০ সালের শেষ দিকে।
তিনি একজন লেখক। তার প্রথম বই ‘Social Media Cyber Security By Abdullah Al Imran’ এমাজন বুক স্টোরে প্রকাশিত হয়। তিনি আরও তিনটি বই প্রকাশ করেছেন, যা Google Playbooks এবং অন্যান্য প্ল্যাটফর্মগুলোতে পাওয়া যায়।





…………………………





শুরুতে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনকে বিনামূল্যে সাইবার সিকিউরিটি সহায়তা করলেও নিজের দক্ষতাকে আয়ের মাধ্যম হিসেবে কাজে লাগাতে ফ্রিল্যান্সিংয়ের দিকে পা বাড়ান উদ্যোক্তা ইমরান। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৯ সালে নিজের পরিচয় গড়ার স্বপ্ন নিয়েই শুরু করেন এ প্রতিষ্ঠানটি।
পথচলার শুরুতে মিউজিক ডিস্ট্রিবিউশন, বই ডিস্ট্রিবিউশন, গুগল ও বিং নলেজ প্যানেল নিয়ে কাজ শুরু করেন আব্দুল্লাহ আল ইমরান। পাশাপাশি কাজ করেন সাইবার নিরাপত্তা নিয়েও। প্রথমে বিনা পারিশ্রমিকে কাজ করা শুরু করলে ধীরে ধীরে দেখা পান সফলতার। এখন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সাইবার নিরাপত্তা পরামর্শ দেওয়ার পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সিকিউরিটি ও ওয়েব ডেভেলপমেন্ট নিয়ে কাজ করছেন।
কাজের ক্ষেত্র নিয়ে ইমরান বলেন, ‘সোশ্যাল মিডিয়ায় সাইবার নিরাপত্তা নিয়ে বেশ কিছু পরিকল্পনা আছে। কেননা প্রতিনিয়ত মানুষ এই সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। কাজের শুরুতে সফলতা আশা করে হতাশ হলে চলবে না। মনোবল ও অটুট ধৈর্য ধারণ করতে হবে।’
ইমরানের এআই ডেজিটাল এজেন্সি এখন বাংলাদেশের সীমানা পেরিয়ে ভারত ও শ্রীলংকায় সেবা দিয়ে চলেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের মাধ্যমেই শ্রীলঙ্কা ও ভারতীয় ক্লায়েন্ট যুক্ত হন তাদের সঙ্গে এবং তাদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম একাউন্টের নিরাপত্তা ও ম্যানেজমেন্টের দ্বায়িত্ব দেন ইমরানদের। এজেন্সির বিশ্বস্ততা আকৃষ্ট করে তাদের। দেশীয় অনেক ফ্রিল্যান্সার, যারা কিনা ওয়েবসাইট ডেভেলপমেন্ট, গ্রাফিক্স ডিজাইন প্রভৃতি নিয়ে কাজ করে থাকেন সচরাচর, তারাও ইমরানদের সঙ্গে যুক্ত হয়ে কাজ করতে আগ্রহ প্রকাশ করে থাকেন।





…………………………





এছাড়াও এজেন্সি থেকে বিনা পারিশ্রমিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের নানা জটিলতা, সমস্যার সমাধান প্রদান ও দিক-নির্দেশনা দেওয়া হয়। ইমরানের এজেন্সির লক্ষ্য নিজেদের একটা আলাদা মার্কেটপ্লেস হিসেবে ভবিষ্যতে প্রতিষ্ঠিত করে কাজ করা, যাতে এর মাধ্যমে আরও তরুণরা কাজ পেতে পারেন। এজন্য এজেন্সির ব্র্যান্ড ভ্যালুর দিকে নজর রাখা হচ্ছে, যার মূলমন্ত্র হিসেবে সততা, নিষ্ঠা ও দ্বায়িত্বশীল আচরণ প্রদর্শন করে সেবাগ্রহীতাদের আকৃষ্ট করছে আব্দুল্লাহ আল ইমরানের এআই ডেজিটাল এজেন্সি।
তথ্য প্রযুক্তি ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে কাজে লাগিয়ে ইমরানের মতো হাজারো তরুণ এখন প্রেরণার উৎস হয়ে দাঁড়িয়েছেন।
লেখক: ফিচার লেখক ও গণমাধ্যমকর্মী।