




…………………………





উচ্চশিক্ষা নিয়ে চাকরির জন্য তৈরি হচ্ছেন লাখ লাখ শিক্ষার্থী। কিন্তু চাকরির বাজারের সংকট যেন সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে। এর মধ্যে মহামারির কারণে আরও সংকুচিত হয়েছে এ ক্ষেত্র। তবে এসব তরুণ শিক্ষার্থীদের চাকরির বাজারে প্রবেশদ্বার হিসেবে ভূমিকা রাখছে ইউনিলিভারের বিজমায়েস্ট্রোজ প্রতিযোগিতা।
…….
শুধু চাকরি নয়, তরুণদের উন্নয়নে প্রতিনিধি বাছাই করে তাদের মধ্য থেকে ভবিষ্যৎ নেতা এবং নতুন উদ্যোক্তা তৈরিতেও ভূমিকা রাখছে এই প্রতিযোগিতা। বিপণন ও বাজার সৃষ্টির উদ্ভাবনী এই প্রতিযোগিতার ১২তম আসরের নিবন্ধন চলছে। এবারের প্রতিযোগিতার প্রথম পর্বের নিবন্ধন শুরু হয়েছে ১৭ অক্টোবর থেকে। ৩০ নভেম্বর চূড়ান্ত পর্বের আসরে ঘোষণা করা হবে বিজয়ী দলের নাম।





…………………………





এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারবেন দেশের যে কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। যে কোনো বিষয়ে স্নাতক (সম্মান) শেষ বর্ষে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা তিনজনের একটি দল গঠনের মাধ্যমে অংশ নিতে পারবেন।
আয়োজকরা জানিয়েছেন, প্রতিবছর বিজমায়েস্ট্রোজ প্রতিযোগিতার চ্যাম্পিয়ন দলকে ‘ফিউচার লিডারস লিগ’ শীর্ষক বৈশ্বিক প্রতিযোগিতার মঞ্চে যাওয়ার সুযোগ করে দেয় ইউনিলিভার। বৈশ্বিক প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয় যুক্তরাজ্যের লন্ডনে। এতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অনুষ্ঠিত ইউনিলিভারের এই ধরনের প্রতিযোগিতার বিজয়ী দলগুলো অংশ নিয়ে থাকে। অতীতে বাংলাদেশের চ্যাম্পিয়ন দল বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায়ও তাদের মেধার প্রমাণ দিয়েছে এবং ‘চ্যাম্পিয়ন’ হয়েছে বলে জানায় প্রতিষ্ঠানটি।
আয়োজকরা জানান, দেশে ও বৈশ্বিক পরিমণ্ডলে এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারীদের প্রখর অন্তর্দৃষ্টি, চিন্তাশক্তি ও অসাধারণ মেধার জন্য মূল্যায়ন করা হয়ে থাকে। বিগত বছরগুলোতে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে দুর্দান্ত সব আইডিয়া পাওয়া গেছে। এসব আইডিয়ার মধ্য থেকে সেরা আইডিয়াগুলো ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে প্রয়োগ করেছে ইউনিলিভার।





…………………………





বিজমায়েস্ট্রোজের প্রথম রাউন্ড হবে মূল্যায়নমূলক রাউন্ড। এই পর্বে অংশগ্রহণকারী প্রতিযোগী দলগুলোকে অনলাইনে ভিডিও উপস্থাপনা দিতে হবে। এই পর্বেই সম্পন্ন হবে বিজমায়েস্ট্রোজের প্রতিযোগীদের নিবন্ধন প্রক্রিয়া। এতে অংশগ্রহণকারী প্রতিটি দলকে (তিনজন) নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে একটি পাঁচ মিনিটের ভিডিওতে তাদের বিজনেস আইডিয়ার ওপর সমাধান উপস্থাপন করতে হয়।
এরপর সেমিফাইনাল, প্রথম রাউন্ডের ফল ঘোষণার পরপরই ৩০টি দল দ্বিতীয় রাউন্ডের জন্য তাদের কেইস পেয়ে যাবে। এরই ধারাবাহিকতায় একটি ভার্চুয়াল ব্রিফিংয়ের আয়োজন করা হবে। সেই সঙ্গে মেন্টরিং সেশন বা পরামর্শ প্রদানের ব্যবস্থা থাকবে। এসময় ইউনিলিভারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের কোনো বিশেষজ্ঞ উপস্থিত থাকবেন, যিনি প্রাসঙ্গিক বিষয় ব্যাখ্যা করবেন।
দ্বিতীয় রাউন্ড হবে মূলত একটি লাইভ প্রেজেন্টেশন। এতে প্রতিযোগী দলগুলো নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে আলাদাভাবে ইউনিলিভারের মূল্যায়নকারীদের সামনে ওয়েবসাইটের মাধ্যমে মাইক্রোসফট টিম বা জুম অথবা সমজাতীয় কোনো ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্ম থেকে প্রেজেন্টেশন দেবেন। এরপর ইউনিলিভারের মূল্যায়নকারী সেটি মূল্যায়ন করবেন।
সবশেষ দুটি দলের ছয়জন শিক্ষার্থী ফাইনাল রাউন্ডে উঠবেন। তাদের নিয়ে কোনো ভেন্যুতে গ্র্যান্ড ফিনালে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। এতে সীমিত সংখ্যক আমন্ত্রিত অতিথি উপস্থিত থাকবেন। দুই দলকেই নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তাদের উদ্ভাবিত সমাধান জমা দিতে হবে এবং সেটি উপস্থাপন করতে হবে।





…………………………





ফাইনাল প্রেজেন্টেশনের আগে ফাইনালিস্টদের জন্য ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে পরিচিতিসহ শিক্ষামূলক ও মেনটরিং সেশনের আয়োজন করা হবে। ফাইনাল প্রেজেন্টেশনে দিন চূড়ান্ত ফল ঘোষণার আগে অংশগ্রহণকারী, অর্থাৎ প্রতিযোগী দুটি দল, বিচারক ও আমন্ত্রিত অতিথির জন্য ভার্চুয়াল বিনোদন, অর্থাৎ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে, যা ফেসবুকও লাইভ হবে।
বিজমায়েস্ট্রোজ প্রতিযোগিতার ফাইনাল রাউন্ডের বিচারক হিসেবে থাকছেন- ইউনিলিভার বাংলাদেশ লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) জাভেদ আখতার, ইউনিলিভার কনজ্যুমার কেয়ার লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) কে এস এম মিনহাজ, এপেক্স ফুটওয়্যার লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর এবং বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রূপালী চৌধুরী।
এর আগে ২০১০ সালে প্রথমবারের মতো বিজমায়েস্ট্রোজ প্রতিযোগিতার আয়োজন করে ইউনিলিভার বাংলাদেশ (ইউবিএল)। তখন এই আয়োজনের লক্ষ্য ছিলো- ভোক্তাদের দৃষ্টিকোণ থেকে ব্যবসায়িক সমস্যা সমাধানে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে সেরা ভাবনাগুলো তুলে আনা। প্রতিযোগিতা শুরুর পরবর্তী এক দশকে বিজমায়েস্ট্রোজ নানা ধরনের থিম নিয়ে আসে শিক্ষার্থীদের সামনে। আর এই বিষয়গুলো নির্বাচন করা হয় সমসাময়িক ব্যবসায়িক পরিস্থিতি ও প্রাসঙ্গিকতা বিবেচনা করে।





…………………………





ইউনিলিভারের হেড অব করপোরেট অ্যাফেয়ার্স, পার্টনারশিপ অ্যান্ড কমিউনিকেশনস শামীমা আক্তার বলেন, বিজমায়েস্ট্রোজের ভিশন হলো- বাংলাদেশের শিক্ষিত যুবসম্প্রদায়ের সামনে এমন একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা, যাতে তারা দলবদ্ধভাবে এগিয়ে আসে। একটি কাঠামোগত পদ্ধতির আওতায় প্রতিযোগিতায় অবতীর্ণ হয় নিজেদের আগামী দিনের নেতা হিসেবে গড়ে তুলতে পারে। এছাড়াও বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী শিক্ষার্থীদের প্রকৃত ব্যবসায়ের রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা অর্জনের সুযোগ এবং ইউনিলিভারের ট্যালেন্ট পাইপলাইনের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়।
ইউনিলিভার বাংলাদেশ লিমিটেডের হিউম্যান রিসোর্সেস ডিরেক্টর সাকসি হান্ডা জানান, প্রতিবছর বিজমায়েস্ট্রোজ প্রতিযোগিতায় অনেক শিক্ষার্থী অংশ নেয়। সেখানে সেমিফাইনাল, ফাইনাল থেকে চ্যাম্পিয়ন-রানাসআপ নির্বাচিত হন।
তিনি বলেন, আমরা এখন এমন একটি অবস্থানে আছি, যেখানে গর্ব করে বলতে পারি যে করপোরেট বিশ্বে অনেক বাংলাদেশি সিইও আছে। তারা নিজেদের মেধা দিয়ে ধাপে ধাপে এই অবস্থানে এসেছেন।