Mon. Dec 11th, 2023

    বৈশ্বিক মহামারি করোনায় থমকে গেছে গোড়া বিশ্ব। অর্থ’নৈতিক ব্যবস্থাও ভঙ্গুর। মহামারি এই ভাই’রাসের প্রকোপ দেশে ছড়িয়ে পড়ায় গত মার্চ থেকে বন্ধ রয়েছে সব শিক্ষা’প্রতিষ্ঠান। বসে বসে অলস সময় পার করতে হচ্ছে কয়েক কোটি শিক্ষার্থীকে।

    কিন্তু এই বিরূপ পরিস্থিতিতেও থেমে থাকেননি কলেজ-বিশ্ব*বিদ্যালয় পড়ুয়া কিছু শিক্ষার্থী। যাঁরা নানা প্রতিকূল;তাকে জয় করে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তার ভূমিকায় নিজেদের দাঁড় করিয়েছেন।

    এমন একজন ঢাকা বিশ্ব’বিদ্যালয়ের (ঢাবি) ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ২০১৩-১৪ সেশনের ছাত্রী শিউলি নাহার তমা।

     

    ★উদ্যোক্তা হওয়ার আগ্রহ কিভাবে তৈরি হলো? — এই প্রশ্নের জবাবে তমা জানান, “নিজে কিছু একটা করে স্বাব’লম্বী হবো। সেই ভাবনা থেকেই উদ্যেক্তা হওয়ার আগ্রহ। কারণ নিজে কিছু অর্জন করার যে আনন্দ আছে, সেটা তো আর অন্য কিছুতে পাওয়া যায় না। বিষয়’টা মূলত এমনই। এর বাইরে ভিন্ন কিছু নয়।

    জানা গেছে, করোনার প্রদুর্ভাব শুরু পর “চা  ওয়ালা” নামক ফেসবুক পেজ থেকে শুরু করেন ই-কমার্স প্লাটফর্ম। এখান থেকে সিলেটের হবিগঞ্জ আর শ্রীমঙ্গলের ১৩ রকমের চা নিয়ে কাজ করছে তমা।

    বর্তমানে দেশের বিভিন্ন জায়গাতে পণ্য ডেলিভারি দেয়া হচ্ছে। আগামীতে আরও নতুন নতুন চা সংযুক্ত করার পরি’কল্পনা রয়েছে বলে জানান তিনি।

    ★কখন, কিভাবে উদ্যোক্তা হিসেবে যাত্রা শুরু?— এই প্রশ্নের জবাবে তমা জানান, “আমার বাড়ি চায়ের রাজ্য সিলেটের হবিগঞ্জে। আবার নিজেও চা খুব পছন্দ করি। তাই চা নিয়ে কাজ করার পরিকল্পনা আমার অনেক আগে থেকেই ছিলো।

     

    কিন্তু পড়া’শোনার ব্যস্ততার কারণে আসলে সময় করে উঠতে পারছিলাম না। তবে করোনা মহা’মারির কারণে মার্চে যখন দেশে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হলো, একটা লম্বা ছুটি পেলাম, অনেক সময় তখন পেলাম।

    তাই ভাবলাম নিজের ইচ্ছাটা এবার পূরণ করা যায়। তারপর থেকেই বিষয়টি নিয়ে কাজ শুরু করেছি।

    মাত্র ৪ হাজার টাকার পুঁজি নিয়ে ব্যবসা শুরু করেন তমা। এখন পর্যন্ত সব মিলিয়ে ২ লাখ টাকার উপরে পণ্য বিক্রি করা হয়েছে। ‘উদ্যোগটাকে কিভাবে আরও বড় করা যায়, বর্তমানে সেটা নিয়েই ভাবছি। চেষ্টা করবো ‘চা ওয়ালা’কে একটা ব্যান্ডে রূপান্তর করার’-জানান তমা।”

    ব্যবসায় নেমে বাঁধা নয়, বরং সবার কাছ থেকে উৎসাহ পেয়েছেন তমা। তার মতে, শুরু থেকেই পরিবার ও পরিচিত’জনরা সবাই আমাকে উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছে। তারা নতুন নতুন সব বিষয় আমাতে সংযোজন করতে বরাবরই অনুপ্রাণিত করে।

    সব ধরনের পরামর্শ ও সহ*যোগিতা আমি সব সময়ই পেয়েছি তাদের কাছ থেকে।

     

    ★ভবিষ্যতে এটাকে ক্যারিয়ার হিসেবে নেয়া হবে কিনা?— এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “আমার ক্যারিয়ার শুধুমাত্র এই ‘চা ওয়ালা’ উদ্যেগের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখার ইচ্ছে নেই। এর বাইরেও কিছু করার পরিকল্পনা রয়েছে। আমি সে অনুযায়ী কাজ করছি।

    প্রতি’কূলতাকে জয় করে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তার ভূমিকায় নিজেদের দাঁড় করি’য়েছেন অনেক শিক্ষার্থী।

    তাদের উদ্দেশ্যে তমা বলেন, পরিকল্প’নাটা বা আইডিয়াটা শক্ত-পোক্ত করে কাজ শুরু করুন। যে পণ্য নিয়ে কাজ করতে চান তা সম্পর্কে আগে জানুন।

    তারপর মার্কেট ভ্যালু সম্পর্কে খোঁজ-খবর নিন। পণ্যের গুণগত মান ঠিক রেখে সততার সাথে পরিশ্রম করলে সফলতা আসবেই। আমি এমনটাই বিশ্বাস করি।