




বিসিএস মানেই গাঁধার মত খাটুনি নয়। আপনাকে হতে হবে আত্মবিশ্বসী পরিশ্রমী কৌশলী ঘোড়া। তাহলেই রেসে আপনার বিজয় সুনিশ্চিত। খুব সু-নির্দিস্ট ও পরিকল্পিত পড়াশোনা আপনাকে আত্ম’বিশ্বাসী করে তুলবে। তেমনী একজন সফল ব্যাক্তি মো. সালাহ্উদ্দিন। ৩৬ তম বিসিএসে পুলিশ ক্যাডারে ১ম হয়েছেন।
সালাহ্উদ্দিন ঢাকা বিশ্ব’বিদ্যালয়ের “অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেম” বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাত-কোত্তর সম্পন্ন করেন। BBA পরীক্ষায় সিজিপিএ ৩.৬৩ ও MBA পরীক্ষায় সিজিপিএ ৩.৭৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হন।





বিশ্ব’বিদ্যালয়ে পড়ার সময় সময় স্বপ্ন ছিল চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট হওয়ার। তাই অনার্সে নিজের বিভাগের পড়াকেই গুরুত্ব দিয়েছেন। MBA শেষ করেই তিনি পল্লী বিদ্যুতে এজিএম পদে চাকরিতে যোগ দেন। কিন্তু বন্ধুদের বিসিএসে যোগ দিতে দেখে লোভনীয় এ চাকরি ছেড়ে প্রস্তুতি শুরু করেন BCS পরীক্ষার।
প্রথমেই পুরো বিসিএসের সিলেবাসটি ভালো করে পর্যালোচনা করে নেন। হলের ও বিশ্ববিদ্যালয়ের যেসব ভাইয়েরা বিসিএসে ভালো করেছে তাদের থেকে পরা’মর্শ নেন কিভাবে পড়তে হবে। তারপর বন্ধুদের নিয়ে একটা স্টাডি-গ্রুপ তৈরি করেন।
যে যে বিষয়ে ভালো ছিলেন সে সে বিষয়ে সহ’যোগিতা করতেন। নির্দিষ্ট একটা বিষয় নিয়ে সকলে অলোচনা করতেন। যে সব বিষয়ে বেশি নাম্বার অর্জন করা সম্ভব যেমন ইংরেজী, গণিত ও বিজ্ঞান সেসকল বিষয় গুরুত্ব সহকারে পড়েছেন। প্রতিদিনের পড়া ভাগ করে প্রতিদিন শেষ করতেন। সালাহ্উদ্দিন বলেন, ‘আমি সব সময় আউট’পুট বেজড পড়ালেখা করেছি।





একসাথে সব বিষয় না পড়ে যতটুকু পড়েছি গুছিয়ে পড়েছি। প্রতিদিন কতটুকু পড়বো কত সময়ের মধ্যে তা আগেই নির্দিষ্ট করে নিতাম। প্রস্ততির শুরুর প্রথমেই সিলেবাস’টি ভালো করে বুঝে নিয়েছি’।
৩৬ তম বিসিএসে ভালো-ভাবে প্রস্ততি নিয়ে অংশগ্রহণ করেন। প্রিলি ও রিটেন উত্তীর্ণ হয়ে ভাইভায় অংশগ্রহণ করেন। বিসিএস ভাইভার পরের দিনই পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনে সহকারী ব্যবস্থাপক পদে চাকরিতে যোগ দেন। চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ হলে দেখেন পুলিশ ক্যাডারে প্রথম হয়ে সুপারিশ প্রাপ্ত হয়েছেন।
নিজের সফলতায় সালাহ্উদ্দিন বলেন, ‘আমি আসলে খুব মেধাবী ছাত্র ছিলাম না। আমার মা-বাবার দোয়া, উৎসাহ আর বন্ধুদের আন্তরিক সহ’যোগিতা ও নিজের কঠোর পরিশ্রম আমাকে এ শীর্ষ চূড়ায় পৌঁছে দিয়েছে। তাছাড়া আমি ভাবতেই পারছি না যে, পুলিশ ক্যাডারে প্রথম হয়েছি। এটা আমার কাছে স্বপ্নের মতো মনে হচ্ছে’।





সালাহ্উদ্দিন ২০০৬ সালে ভোলা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে SSC এবং ২০০৮ সালে ভোলা সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। উভয় পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়ে কৃতিত্বের সাথে উত্তীর্ণ হন। এরপর ২০০৯-২০১০ সেশনে ঢাকা বিশ্ব*বিদ্যালয়ের হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য পদ্ধতি বিভাগে ভর্তি হন।
সালাহ্উদ্দিন লেখাপড়ার পাশাপাশি খেলাধুলাও করেছেন নিয়মিত। নিজ বিভাগের আন্তঃবিভাগ ফুটবল ও ক্রিকেট উভয় খেলাতেই অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্বপালন করেছেন।। বন্ধুদের কাছে তিনি ছিলেন অন্য রকম একজন সহযোগী। সালাহ্উদ্দিন রিফাতের বাবা মো. শাহাবুদ্দিন একজন ব্যবসায়ী ও মা ফরিদা ইয়াসমিন গৃহিণী।
নিজের ভবিষ্যৎ ইচ্ছা নিয়ে সালাহউদ্দিন বলেন, “এ পেশা থেকে জনগনের সেবা করার সুযোগ সর্বাধিক। অবহেলিত, শোষিত সহায় সম্বলহীন মানুষের জন্য কাজ করা যায়। পুলিশে যোগ দিয়ে পুলিশ বাহিনীকে আরো জনবান্ধব করতে চাই।





একজন সৎ ও দক্ষ দেশপ্রেমিক হিসেবে পুলিশি সব সেবা জনগণের দ্বার প্রান্তে সহজে পৌঁছে দেয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।” বিসিএস প্রার্থিদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনার প্রস্ততি আপনার নিকট। যে বিষয়টিতে আপনার দুর্বলতা আছে সবার আগে সেটি কাটিয়ে উঠতে হবে। বিশেষ করে ইংরেজী ও গণিত বিষয়ে মৌলিক পড়াগুলো ভালো করে আয়ত্ব করতে হবে।দেন বিষয় ধরে নিয়মিতভাবে এগিয়ে যেতে হবে।লিখিত পরীক্ষার জন্য হাতের লেখাকে অনেক গুরুত্ব দিতে হবে।





বিভিন্ন তথ্য, গ্রাফ, মানচিত্র, কোটেশন সঠিকভাবে তুলে ধরে খাতা সুন্দর করে উপস্থাপন করতে হবে।