




……………………





বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হতে চেয়েছি লেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে গ্র্যাজুয়েট করা ফরহাদ। কিন্তু শেষতক ৩৮তম বিসিএসে অংশ নিয়ে হলেন আনসার ক্যাডারের কর্মকর্তা। বর্তমানে কর্মরত আছেন ৬ নং আনসার ব্যাটালিয়ন হেড;কোয়ার্টারে (নেত্রকোনা) সহকারী পরিচালক হিসেবে। তাঁর চাকরি পাওয়ার পেছনের গল্প শুনেছেন এম এম মুজাহিদ উদ্দীন।





কৃষি বিষয়ে অনার্স-মাস্টার্সে ভালো ফল করার পর স্বাভাবিক*ভাবেই বিশ্ববিদ্যা;লয়ের শিক্ষক হওয়ার আগ্রহ ছিল। কিন্তু বিভিন্ন কারণে সিদ্ধান্ত নিতে পারছিলাম না, চাকরির জন্যও প্রস্তুতি ছিল না। এভাবে চলছিল; বুঝতে পারলাম অন্যদের চেয়ে অনেকটা পিছিয়ে গেছি। পাস করার বছর-খানেক পর চাকরির জন্য পড়াশোনা শুরু করি। প্রতিদিন নিয়মিত ৮-১০ ঘণ্টা করে পড়াশোনা করেছি।
প্রস্তুতির শুরুতেই বিগত বিসিএসের প্রশ্নগুলো বিশ্লেষণ ও পুরো সিলেবাসটা বোঝার চেষ্টা করেছি। প্রথমে বাজারে প্রচলিত একটা গাইড বই সিরিজ সংগ্রহ করে শেষ করলাম এবং এরপর এগুলোর সহায়ক হিসেবে অন্য সিরিজেরও কিছু বই পড়লাম। বিজ্ঞানের ছাত্র হিসেবে গণিত ও বিজ্ঞানে বেসিক ভালোই ছিল। কিন্তু সমস্যা ছিল বাংলা সাহিত্য, ইংরেজি ব্যাকরণ আর নৈতিকতা সুশাসনে। প্রচুর রিভিশন আর অনুশীলনের পর বাংলা-ইংরেজি মোটামুটি আয়ত্তে চলে আসে। সিলেবাস দেখে দেখে বাছাই করে পড়তাম। মুখস্থ না করে বারবার পড়তাম, যাতে সামগ্রিক একটা ধারণা আসে। লিখিত পরীক্ষায় ভালো নম্বর পাওয়ার জন্য ডাটা, চার্ট, কোটেশন ব্যবহার গুরুত্বপূর্ণ। তাই এগুলো আলাদা একটা খাতায় নোট করেছিলাম।





………………………….





৩৭তম প্রিলিতে অংশ নিয়ে পাস করে তৈরি হই লিখিত পরীক্ষার জন্য। বুঝতে পারছিলাম নাকী দিয়ে শুরু করব আর কী কী পড়ব। ফলে অপ্রয়োজনীয় অনেক কিছু পড়ে সময় নষ্ট করেছি! এর মধ্যেই ৩৮তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে, আবেদনও করে ফেলি। ২০১৮-এর জানুয়ারিতে ছিল ৩৭তম বিসিএসের ভাইভা আর এর মাসখানেক আগে (ডিসেম্বর-২০১৭) ৩৮তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি। এ অবস্থায় পরবর্তী বিসিএসের প্রিলির ওপর গুরুত্ব দিই।
পরে প্রিলিতে উত্তীর্ণ হই। এদিকে ৩৭তম বিসিএসের ভাইভাও মোটামুটি হয়েছে; কিন্তু চূড়ান্ত ফলাফলে দেখলাম নন-ক্যাডার পেয়েছি। এর আগে রাষ্ট্রায়ত্ত অগ্রণী ব্যাংকে সিনিয়র অফিসার পদের নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ২০১৮ সালের মে মাসে যোগ দিই। সারা দিন ব্যাংকের কাজ করে বাসায় ফিরে রাতে ৩৮তম বিসিএসের (লিখিত) জন্য পড়াশোনা করতাম।
প্রত্যাশামতো পাসও করি লিখিত পরীক্ষায়, কিন্তু এরই মাঝে আমার বাবা ক্যান্সারে মারা যান। কিছুদিনের মধ্যে নিজেকে সামলে আবার শুরু করি ভাইভার জন্য পড়াশোনা।





………………………





আব্দুল জব্বার খান স্যারের বোর্ডে ৩৮তম বিসিএসের ভাইভা দিই। বোর্ডে অল্প সময়েই জড়তা কাটিয়ে উঠি, দু-একটি প্রশ্নের উত্তর দিতে পারিনি। কিন্তু পুরো সময়ে আমি বেশ সাবলীল-স্বাভাবিক ছিলাম। ৩৭তম বিসিএসে এই জায়গাটায়ই পিছিয়ে ছিলাম, তাই হয়তো কাঙ্ক্ষিত ক্যাডার পাইনি। ২০২০ সালে প্রকাশিত হয় চূড়ান্ত ফল, আমি সুপারিশ*প্রাপ্ত হই পছন্দক্রমের আনসার ক্যাডারে।





তথ্যসূত্রঃ কালের কন্ঠ (১০ এপ্রিল, ২০২১)