Fri. Jun 9th, 2023

    …………………..

    কথায় আছে, মেধাকে চাপিয়ে রাখা যায় না। যে কোনোভাবে প্রকাশ পাবেই। পরিশ্রম মানুষকে সফলতার পথ দেখায়। প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে                                অনেকেরই উঠে আসার উদাহরণ রয়েছে সমাজে। তেমনি নরসিংদী সদর উপজেলার আলোকবালী ইউনিয়নের একটি প্রত্যন্ত গ্রাম বাখরনগর। এ গ্রামের ছেলে মো. মোশারফ হোসাইন। ৩৬তম বিসিএসের সব কটি ধাপ কৃতিত্বের সঙ্গে উত্তীর্ণ হয়ে                                      প্রশাসন ক্যাডারে সুপারিশ*প্রাপ্ত হয়েছেন তিনি।

    বাখরনগর গ্রামে নেই পর্যাপ্ত সুবিধা। মোশারফ হোসাইনই ওই গ্রামের প্রথম সন্তান হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া কৃতিত্ব অর্জন করেন। সবচেয়ে বড় বিষয় এই ইউনিয়ন থেকে ইতোপূর্বে                                        বিসিএস ক্যাডারে সুযোগ পাননি কেউ। এমন একটি প্রত্যন্ত এলাকা থেকে তার সফলতা অনেককেই তাক লাগিয়ে দিয়েছে। মোশারফের বাবা গ্রামের সাধারণ একজন কৃষক।নরসিংদী সদর থেকে তার গ্রামের যোগাযোগ ব্যবস্থার করুণ দশা। নরসিংদী সদর থেকে তার বাড়িতে যেতে হয় নদী পথে। নদী পথে ট্রলারে চড়ে তার বাড়িতে পৌঁছাতে প্রায় এক ঘণ্টা সময় লাগে।  কৃষক বাবা মো. তাহের আলী ও                                          গৃহিনী মা রেজিয়া বেগমের একমাত্র ছেলে মো. মোশারফ হোসাইন।

    …………………

    মোশারফ আলোকবালী আ. মান্নান চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি এবং অধ্যাপক আব্দুল মজিদ কলেজ থেকে                                           এইচএসসি পাশ করেন। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত্তিকা পানি ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ থেকে সফলতার সাথে অনার্স (বিএসসি) এবং মাস্টার্স (এমএসসি) পাশ করেন। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পপুলেশন সাইন্স থেকে মাস্টার্স (MPS), মার্কেটিং বিভাগ থেকে এমবিএ (MBA) ডিগ্রি অর্জন করেন। পাশাপাশি ISIT থেকে কম্পিউটার সাইন্সে ডিপ্লোমা (DCSA) করেন। পরে বাংলাদেশ প্রকৌশ বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) থেকে                                         ওয়াটার রিসোর্স ডেভেলপমেন্ট এর ওপর মাস্টার্স (MSc) ড্রিগ্রি অজন করেন।

    এই সাফল্যের পিছনের গল্প জানতে চাওয়া হলে এক কথায় উত্তর দিলেন ‘পরিশ্রম’। তিনি বলেন, “পরিশ্রমের বিকল্প নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষ থেকেই স্বপ্ন ছিল বিসিএস ক্যাডার হওয়ার। যার ফলে তখন থেকেই                                                             একটু একটু পড়াশোনা করতাম। সব কর্মব্যস্ততার মাঝেও দৈনিক পড়াশোনা চালিয়ে যেতাম।” ধীরে ধীরে বাজারের গতানুগতিক সব বইয়ের ওপর দখল সৃষ্টি করেন। তিনি মনে করেন বিসিএস এ সফলতার জন্য প্রধান বিষয় হলো ইচ্ছা এবং পরিশ্রম। এ দুটো জিনিস নিজের মধ্যে                         ধারন করতে পারলে সাফল্য ধরা দিবে।

    …………………….

    বিসিএস প্রত্যাশীদের জন্য পরামর্শ হিসেবে তিনি বলেন, প্রথমত প্রিলির জন্য অষ্টম থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত                               বোর্ড বইগুলো শেষ করা। তারপর বাজারের গতানুগতিক প্রকাশনীর এক সেট বইয়ের ওপর দখল সৃষ্টি করা। দ্বিতীয়ত, লিখিত পরীক্ষার্থীদের জন্য পরামর্শ হলো পত্রিকা এবং বই থেকে তথ্যগুলো নোট আকারে লিখে রাখা যা ভাইভাতেও সহায়ক হিসেবে কাজ করবে।    ভবিষ্যতে পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে চাইলে বলেন, প্রশাসন ক্যাডারে যোগদানের পর দুর্নীতি                                        মুক্ত সমাজ গড়তে চান এবং সরকারি সেবাকে জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে চান। নিজ যোগ্যতা এবং কর্মদক্ষতার মাধ্যমে                                                   সর্বোচ্চ পদ ক্যাবিনেট সেক্রেটারি পদে অধিষ্ঠিত হতে চান। ভবিষ্যতে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইডি অর্জন করতে চান।

    ……………………….

    তথ্যসূত্রঃ একুশে টেলিভিশন ( প্রকাশিত :  ৩ ডিসেম্বর ২০১৭)