Sat. May 27th, 2023

    …………………………

    আজ বিশ্ব শিক্ষক দিবস। বাংলাদেশের সকল পর্যায়ের সকল শিক্ষকদের শুভেচ্ছা। বাংলাদেশই হলো একমাত্র দেশ যেখানে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা হলো রাষ্ট্রের তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারী।
    ……..
    যেখানে রাষ্ট্রের কোন বেতনভোগ চাকুরিজীবীকে তৃতীয় বা চতুর্থ শ্রেণীর বলাটাইতো একটা অপমান। কাউকেই তৃতীয় বা চতুর্থশ্রেণীতে ভাগ করাই হলো অসভ্যতা। আর সেখানে ছোট ছোট শিশু যারা আগামীদিনের বাংলাদেশকে গড়বে তাদের শিক্ষক হলো রাষ্ট্রের তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারী। আবার বলে শিক্ষাই নাকি জাতির মেরুদন্ড।

    …………………………

    যারা মেরুদন্ড তৈরী করবে সেই কারিগরদের এমনভাবে অপমান করে আপনি কিভাবে একটি সভ্য জাতি গঠন করবেন? আবার অন্য এক্সট্রিমে তাকালে দেখুন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অবস্থা। বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হতে হলে একজনকে নিজ যোগ্যতায় স্কলারশিপ নিয়ে পিএইচডি করে। ক্ষেত্র বিশেষে অনেকের পোস্ট-ডক থাকে।

    অনেকের আবার একাধিক পোস্ট-ডক অভিজ্ঞতা থাকে। তার বেতনাদি ও অন্যান্য সুবিধা যদি কেবল মাস্টার্স পাশ সরকারি কর্মকর্তাদের চেয়ে কম হয়, রাষ্ট্রের ওয়ারেন্ট অফ প্রিসিডেন্সে অনেক নিচে হয় সেই দেশে ভালো মানের অধ্যাপক এবং গবেষক কিভাবে পাবেন? বাংলাদেশেই প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকের বেতন ৩ থেকে ৪ লক্ষ টাকা। কত বড় বৈষম্য বুঝতে পারছেন।

    পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা তারপরেও পাবলিকে পড়ে আছে। ভারতে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় লেভেলের প্রতিষ্ঠানের একজন অধ্যাপকের বেতন হলো ২.৫ লক্ষ টাকা। ভারতের লিভিং এক্সপেন্স বাংলাদেশ থেকে কম। গাড়ির দাম অনেক কম, গাড়ির তেলের দাম কম। আর বাংলাদেশে বড়জোর ১ লক্ষ টাকা বা একটু কম বেশি। এই হলো শিক্ষা ও গবেষণার মূল্যায়ন।

    …………………………

    আবার প্রশ্ন করেন শিক্ষকরা কেন পার্ট টাইম অন্যত্র পড়ায়? শিক্ষকরাতো পাজেরো চালায় না! ঢাকা শহরের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তের প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে পার্ট টাইম পড়ানো কি খুব আনন্দের? শিক্ষকরা কি আনন্দে খুশিতে পার্ট-টাইম পড়ায়। একই কথা খাটে স্কুল কলেজের শিক্ষকদের ক্ষেত্রে।

    কেউ কি আনন্দে আর খুশিতে প্রাইভেট আর কোচিং এ পড়ায়? এইসব বিশদ ভাবে ভেবে এর উৎসমূলে সমাধান না করলে এইসব চলবেই। যতদিন এইসব চলবে ততদিন গবেষণা, শিক্ষকতা কোনটিই সঠিকভাবে চলবে না।লেখক-অধ্যাপক কামরুল হাসান মামুন,ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (লেখকের ফেসবুক টাইমলাইন থেকে সংগৃহীত)