




…………………………





হারুনুর রশিদ নারায়ণগঞ্জে হাজী বেলায়েত হোসেন ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় অনার্স ও মাস্টার্স পাস করেছেন ১৯৯৫ সালে। এমপিওভুক্ত একজন শিক্ষক হিসেবে তিনি মাসে ৩০ হাজার ৫০০ টাকা পান। হারুনুর রশিদ বলেন, তার বিভাগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করা আরো একজন শিক্ষক রয়েছেন। তার নাম কফিল উদ্দিন। সব মিলিয়ে তাদের কলেজে মোট সাতজন শিক্ষক রয়েছেন যারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করে সীমিত বেতনে চাকরি করছেন।
……
হারুনুর রশিদ বলেন, আমি চারবার বিসিএস পরীক্ষার ভাইভা থেকে ফেরত এসেছি। ৯ বার পিএসসির প্রথম শ্রেণী চাকরির ভাইভা থেকে ফেরত এসেছি। জীবনের স্বপ্ন ছিল প্রশাসন ক্যাডারে চাকরি করব। হলো না। জীবনে আর কোনো চাকরির চেষ্টা করিনি। শেষে বাধ্য হয়ে বেসরকারি কলেজে শিক্ষকতার পেশা বেছে নিয়েছি। শিক্ষা ক্ষেত্রে বিরাজমান বিভিন্ন ধরনের বৈষম্যের চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, সরকার আমাদের বেতন দেয় না। দেয় অনুদান। চেকের ওপর লেখা থাকে মাসিক অনুদান বাবদ এত





…………………………





টাকা দেয়া হলো। এটি করুণা। এক দিকে সরকার আমাদের অনুদান দেয়, অন্য দিকে আবার আমাদের কাছ থেকে ট্যাক্স আদায় করে। এটি কেমন নিয়ম। হারুনুর রশিদ বলেন, এমপিও নীতিমালায় লেখা রয়েছে মূল বেতনের সাথে অন্য যেসব সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার কথা, তা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দেবে। কিন্তু ৯০ শতাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষকদের কোনো টাকা দেয় না। অথচ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চালু করতে হলে এ শর্ত মেনেই চালু করতে হয়। কিন্তু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনার সাথে যারা জড়িত, তাদের যারা শিক্ষকদের কোনো আর্থিক সুবিধা দেয় না বা বিভিন্ন ধরনের অনিয়ম করে চলছে, প্রতিষ্ঠানের আয় নয়ছয় করে লুটপাট করছে; তার কোনো তদারকি সরকার করছে না। তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষকদের সুবিধা দেয়া হয় না, বরং বিভিন্নভাবে হয়রানি আর অপদস্থ করেন প্রতিষ্ঠানের মালিক বা পরিচালনার সাথে জড়িতরা। কারণ আমাদের চাকরি তাদের হাতে। তাদের
কোনো অনিয়মের প্রতিবাদ করলে শিক্ষকদের ওপর খড়ক নেমে আসে। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করা উচ্চ শিক্ষিত শিক্ষকদের ওপর প্রভুত্ব করছেন অনেক অশিক্ষিত, অর্ধ শিক্ষিত লোকজন। এটি খুবই বেদনাদায়ক। হারুনুর রশিদ কথা বলার সময় পাশে দাঁড়ানো একজন শিক্ষক বলেন, আমি দেখেছি ধূমপান করতে করতে কমিটির বৈঠকে প্রবেশ করছে ম্যানেজিং কমিটির এক সদস্য। তার তেমন লেখাপড়াও নেই। হারুনুর রশিদ বলেন, আমরা আমাদের বঞ্চনার কথা বলতে আসিনি। এসেছি সর্বস্তরের মানুষের স্বার্থে। দেশের স্বার্থে।





…………………………





শিক্ষা ক্ষেত্রে যে বৈষম্য আর নৈরাজ্য চলছে, তার অবসানের লক্ষ্যে। সাবেক শিক্ষা সচিব নজরুল ইসলাম খান একবার বলেছিলেন, শিক্ষা ক্ষেত্রে যে সঙ্কট চলছে তার একমাত্র সমাধান হলো জাতীয়করণ। আমি এর সাথে সম্পূর্ণ একমত। শিক্ষা ক্ষেত্রে যে নৈরাজ্য, অনিয়ম আর বৈষম্য বিরাজ করছে তার একমাত্র সমাধান জাতীয়করণ ও সুষ্ঠু তদারকি। এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের দাবিতে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে চলমান অনশনে যোগ দিয়েছেন হারুনুর রশিদ। সেখানে কথা হয় তার সাথে।